ছড়ির তরবারি।। ১ম অংশ
দ্বিতীয় অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
দারুণ দুঃসাহসী এক অবাক পুরুষ। নাম উকাশা ইবনে মিহসান (রা)। সবাই তাকে ডাকে আবু মিহসান নামে।
এই নামেই তিনি প্রসিদ্ধ।
এই নামের তিনি পরিচিত।
রাসূলও (সা) তাকে আদর করে কাছে ডাকেন আবু মিহসান বলে।
রাসূলের (সা) ডাক!
সে ডাকে মধু ঝরে।
সে ডাকে শিশির ঝরে।
আর কুলকুল করে বয়ে যায় আবু মিহসানের বুকের ভেতর আনন্দ ও খুশির কোমল ঝরণা ধারা।
কেন বইবে না!
রাসূল (সা) হলেণ মানুষের মধ্যে সেরা মানুষ। নবীদের মধ্যে সেরা ও শ্রেষ্ঠ নবী। সেই মহামানবের ডাক শুনে কার না হৃদয় আপ্লুত হয়?
আবু মিহসানও আপ্লুত হলেন রাসূলের (সা) ভালোবাসায়। তাঁর অসীম মানবিকতায়।
তখনও ইসলামে পালে লাগেনি সুবাতাস।
তখনও মসৃণ হয়নি ইসলামের পথ। বরং সে পথে ছিল কাঁটা আর কাঁটা। বলা যায় বন্ধুর গিরিপথ। কঙ্কর ছিটানো। আঁকাবাঁকা।
যার সাহসী তারাই কেবল সেই পথের যাত্রী হচ্ছেন। ধীরে ধীরে।
এই সাহসীদের সহযাত্রী হলেন আবু মিহসান (রা)।
তিনি ইসলাম কবুল করলেন।
সাথে সাথে তার চারপাশে জ্বলে উঠলো বিরুদ্ধতার আগুন। হিংস্র দাবানল। তবুও তিনি সিদ্ধান্তে অনড়। অটল ঈমানের ওপর। ঠিক যেন হিমালয় পর্বত।
ইসলাম গ্রহণের পর অনেকের মত তিনিও টিকতে পারলেন না মক্কায়।
মক্কা তার জন্মভূমি। মক্কা তার প্রাণপ্রিয় আবাসভূমি।
তবুও, সেই প্রিয় জন্মস্থঅন ছেড়ে তিনি হিজরত করলেন মদিনায়।
পেছনে পড়ে রইলো স্মৃতিবাহী শৈশস ও কৈশোরের নগরী।
চেনা-জানা আপনজন আর নিত্যকার হাঁটাচলার পথঘাট।
তবুও তার মনে কষ্ট নেই। দুঃখ নেই। আছে কেবল এক অপার্থিব আনন্দ। সেটা আল্লাহকে খুশি করার আনন্দ। সেটা রাসূলকে (সা) কাছে পাবার তৃপ্তি। সেটা ইসলামের বিশাল আকাশের নিচে ঠাঁই করে নেবার খুশি।
সেদিনের জন্য এই ধরনের ত্যাগ ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ
আল্লাহ, রাসূল (সা) ও ইসলামকে প্রাণের চেয়ে ভালোবাসলেই কেবল এমন ত্যাগ স্বীকার করা যায়।
আবু মিহসানও তাই করলেন। এটাতো তুচ্ছ ত্যাগ তার কাছে। এর চেয়েও বড় কুরবানী তিনি করেছিলেন। ইসলামের জন্য।
সে সবই তো এখন ইতিহাস হয়ে আছে। সোনালি ইতিহসা।
বদর যুদ্ধ!
সেই কঠিন যুদ্ধের ময়দানে অন্যান্য সাহাবীর সাথে আবু মিহসানও ছিলেন দুর্বার, দুঃসাহসী।
তখন তো ছিল না যুদ্ধের অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র। হাতের তরবারি আর বর্শা- এ ধরনের অস্ত্রই সম্বল।
কাফেরদের বিশাল বাহিনীর মুখোমুখি দুঃসাহসী সত্যের সৈনিক। সংখ্যায় তারা নগণ্য। সমরাস্ত্রও অপ্রতুল। কিন্তু বিশাল তাদের ঈমানী শক্তি।
সেই শক্তি আল্লাহর দেয়া শক্তি।
সেই শক্তি রাসূলের (সা) প্রতি ভালোবাসার শক্তি।
সুতরাং তাদের আর কিসের পরওয়া?